ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঢাকায় কয়েকটি সড়ক অবরোধ তীব্র যানজটে ভোগান্তি

ঢাকায় কয়েকটি সড়ক অবরোধ তীব্র যানজটে ভোগান্তি

রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, আগারগাঁও, শাহবাগ ও শিক্ষা ভবনের সামনে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে ওইসব এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে অন্য এলাকার সড়কগুলোতেও। যানজটের ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অফিস ও নানা কাজে বের হওয়া লোকজন আটকে আছে যানজটে। যদিও শিক্ষার্থীরা শাহবাগ ছেড়ে চলে যাওয়ায় সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। গতকাল রবিবার সকালে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) সংস্কারসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সামনে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেন। এতে ওই ভবন সংলগ্ন সড়ক ও আশপাশের সড়কগুলোয় দেখা দেয় তীব্র যানজট।

জানা যায়, বিটিআরসি ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে বৈধ পথে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমানো ও প্রবাসীদের ফোন আনার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

এনইআইআরের মাধ্যমে প্রতিটি মোবাইল ফোনকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। এর পর থেকে অবৈধভাবে নিয়ে আসা ফোন ব্যবহার করা যাবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এনইআইআর বাস্তবায়িত হলে লাখ লাখ ব্যবসায়ী ও তাঁদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নতুন এই নিয়মের ফলে বিশেষ একটি গোষ্ঠী লাভবান হবে এবং বাড়তি করের চাপে গ্রাহক পর্যায়ে মোবাইলের দাম বেড়ে যাবে।

দেখা গেছে, বিক্ষোভরত ব্যবসায়ীরা বিটিআরসি ভবনের সামনে মূল সড়কের একপাশে অবস্থান নিয়েছেন। তবে বিচ্ছিন্নভাবে আরও কয়েকজন বিক্ষোভকারী সড়কের অন্য পাশও আটকে রেখেছেন। এ সময় ওই সড়ক থেকে বিভিন্ন যানবাহন ঘুরিয়ে দিতে দেখা যায়। প্রধান সড়ক বন্ধ থাকায় আগারগাঁওয়ে জাতীয় আর্কাইভ ভবনের সামনের সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজট দেখা দিয়েছে শ্যামলী, শিশু মেলাসহ আগারগাঁওয়ের আশপাশের সড়কগুলোতেও।

সড়কে যানজটে আটকে থাকা একজন মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, বলা নেই, কওয়া নেই, হুট করে রাস্তা বন্ধ। এভাবে ভোগান্তি করার মানে হয় না।

এক সিএনজি চালককে দেখা যায়, যানজটে আটকা সিএনজি অটোরিকশা থেকে নেমে পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন, এভাবে আন্দোলনের কোনেও মানে নেই। এমনিতেই ঢাকার সড়কে অনেক জ্যাম থাকে। এরপর এখন যাখন-তখন যে কেউ আন্দোলনের নামে সড়ক বন্ধ করে ফেলছেন। এতে ভোগান্তিতে পরছি আমরা গরিব মানুষরা। আজ যে অবস্থা সিএনজি ভাড়াটাই তুলতে পারবো না মনে হচ্ছে। শেরে ই বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির বলেন, এখনও আন্দোলন চলছে। সড়কে যানজট রয়েছে। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। এদিকে গতকাল রবিবার পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখার পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা কর্মসূচি স্থগিত করে সরে যান। এরপর ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

শাহবাগ থানার পরিদর্শকক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে চলে গেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তবে শিক্ষা ভবনের সামনে কিছু শিক্ষার্থী এখনও অবস্থান করায় সেখানে যানজট রয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

এদিকে, একই সময়ে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ দ্রুত জারির দাবিতে শিক্ষা ভবন অভিমুখে পদযাত্রা ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। তারা অধ্যাদেশ জারির দাবিতে নানা স্লোগান দিচ্ছেন। এ কর্মসূচির কারণে সচিবালয় অভিমুখে ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। নিয়েছে কড়া অবস্থান। এ কারণে এই পথ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

অন্যদিকে কলেজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার দাবিতে ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ করে আসছেন ঢাকা কলেজসহ একাধিক কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। আজও তারা কলেজ ক্যাম্পাসসহ আশপাশের এলাকার সড়কে বিক্ষোভ করেছেন। এতে সেখানেও দেখা দেয় যাজটের। পরে অবশ্যভ স্বাভাবিক হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত